“গতকাল ভোর পাঁচটার দিকে ‘নাসা’র একদল বিজ্ঞানী তাদের অফিসিয়াল টুইটার বার্তায় জানায়,‘পৃথিবী থেকে ৯ আলোকবর্ষ দূরের একটি নক্ষত্র সিস্টেমের একমাত্র গ্রহটি বিশাল আকারের একটি গ্রহাণুর সাথে সংঘর্ষে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে!’ ‘নাসা’র ওই দলের প্রধান বিজ্ঞানী ‘সারা লিন্ডা’ বিবিসিকে জানান,‘যদিও আমরা সরাসরি ঘটনাটিকে পর্যবেক্ষণ করতে পারি নি,তবে রেডিও সিগন্যাল থেকে পাওয়া তথ্যমতে এমনটাই ঘটেছে।’
ওই গ্রহে প্রাণ থাকার সম্ভাবনা কেমন?
এরকম প্রশ্নের জবাবে লিন্ডা বলেন,‘এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে গ্রহটি বাসযোগ্য অঞ্চলে ছিল।এমনকি গ্রহটি আবিষ্কারের পর আমরা সেখানে তরল পানীয় পাওয়ার সম্ভাবনা দেখেছি।কিছু রেডিও সিগন্যাল এসেছিল গ্রহটি থেকে,যা সেখানে বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী প্রাণী থাকার সম্ভাবনার দিকে ঈঙ্গিত দিয়েছিল।তবে পরবর্তী এক গবেষণায় জানা যায়,মাতৃনক্ষত্র থেকেই ওই সংকেত এসেছে।আবিষ্কারের পর গ্রহটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘HD 130897’।তবে আমাদের দলের সদস্যরা গ্রহটিকে ‘মিমির’ বলে ডাকি;‘নর্স পুরাণের’ জ্ঞানের দেবতা ‘মিমির’ এর নামানুসারে।কারণ সেখানে জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান প্রাণী থাকার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল।’
বিবিসির করা আরেক প্রশ্নের জবাবে লিন্ডা বলেন,‘জ্যোতির্বিজ্ঞান জগতে সত্যিই এক রোমাঞ্চকর খবর এটি।এর মাধ্যমে গ্রহ ভেঙ্গে নতুন পদার্থ সৃষ্টির বিষয় জানতে পারবো আমরা।তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো ৯ বছর আগে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে গ্রহটি।আর সেই বিস্ফোরণের আলো আজ পৃথিবীতে এসে পৌঁছেছে।’
যদিও জ্যোতির্বিজ্ঞান জগতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার,তবে দুঃখের বিষয় হলো ‘নাসা’র এক্সোপ্ল্যানেট তালিকা থেকে চিরতরে হারিয়ে গিয়েছে গ্রহটি।তবে বিজ্ঞানীরা ভাবছেন পৃথিবীর জন্য এটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে।কারণ হয়তো পৃথিবীও একদিন এরকম গ্রহাণুর আঘাতে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে!”
মোবাইল স্ক্রিনে নিউজটি পরে স্তম্ভিত হয়ে গেল ‘মিমির ১১’ নামের প্রাণীটি।দেখতে অবিকল মানুষের মতো সে।এমনকী মানুষের মতো কয়েক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল তার গাল বেয়ে।ওটা যে তার নিজের গ্রহ।প্রযুক্তির চরম শিখরে পৌঁছে গিয়েছিল গ্রহের অধিবাসীরা।তাদের জ্ঞান পুরো গ্যালাক্সিতে ছড়িয়ে দিতে গ্রহটি থেকে একটি মিশনে পাঠানো হয়েছিল ‘মিমির ১১’কে।সেটা ১০ বছর আগের কথা।প্রাণীটি বুঝলো যে সে পৃথিবীতে আসার ১ বছরের মাথায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল গ্রহটি,তাইতো এতদিন যোগাযোগ করতে পারেনি।এত উন্নত হওয়া সত্ত্বেও ফাঁক থেকে গিয়েছিল তাদের প্রযুক্তিতে যা তাদের ধ্বংস ডেকে এনেছে।‘যাহোক,আর দুঃখ করে লাভ নেই,বরং ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়াই ভালো।পৃথিবীকে এখনো অনেক উন্নত প্রযুক্তি দিতে হবে আমার,’ নিজের মনে কথাগুলো বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল প্রাণীটি।শুধু পৃথিবীবাসীর জন্য...বিড়বিড় করতে করতে হেঁটে যাচ্ছে সে।
Post a Comment