তিতিন


 

#বুক রিভিউ _1

 

বইয়ের নামঃ তিতিন

বইয়ের ধরণঃ উপন্যাস

লেখিকাঃ ফারহিন জান্নাত মুনাদী

 

জীবনপথের আনাচে-কানাচেতে লুকিয়ে আছে সহস্র তিতিন, তাদের জীবনেও আছে আরো সহস্রাধিক অন্ধকারে গল্প। কিন্তু সব অন্ধকার আলোকিত অন্ধকার হয় না। তিতিন তাদের দলে যারা অন্ধকার হাতড়ে আলোর দেখা পেয়েছে। রিমেন, শিক্ষক কখনো হয় অন্ধকারের নাম, দারোয়ান চাচা, পথের টোকাই হয় আলোর পথযাত্রী! তিতিন এক মেয়ের নাম, যে তমসাকে পিছনে ফেলে, জীবনের কালো অধ্যায়কে স্মৃতি পাতায় ফেলে হয়ে ওঠে তাওফিকা। শুধু তাওফিকা হয়েই থামেনি তিতিন। তার "আঁচল" সাথে নিয়ে তার চারপাশে থাকা তিতিনদের জন্য তাওফিকা তৈরির কাজে নেমে পড়ে! তিতিনদের মনে রোপণ করে দেয় সৎভাবে স্বাবলম্বি হওয়ার ইচ্ছেবীজ, সযত্নে পরিচর্যা করেন সেসব বীজের, একসময় যা পরিণত হয় বিশাল মহিরুহ'তে!

 

আমার পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ

"তার হঠাৎই কান্না পাচ্ছে। ভীষণ কান্না। বাবার আদর না পাওয়া মানুষটির মনেও 'বাবা' শব্দটি আজীবনই ভালোবাসায় সিক্ত থাকে। 'বাবা' নামের মানুষ গুলো কখনো সখনো দূষিত হয়ে যায় কিন্তু শব্দের আবেদন কখনো ফুরায় না। 'বাবা' বলে কেঁদে ওঠার মাঝে যেন শব্দের সার্থকতা"

কথাগুলো উপলব্ধি করেছি আমার সমস্ত সত্তা দিয়ে! যে মানুষটা হয় সমস্ত ভরসাস্থল, কখনো কখনো তাওফিকাদের 'তিতিন' জীবনের জন্য সেই মানুষটিই দায়ী থাকে। জানি, এত কিছুর পরেও বাবা হৃদয়ে থাকে 'বাবা' শব্দ হয়ে, মানুষ হিসেবে নয়! তবুও সব তিতিন তাওফিকা হতে পারে কি? সব তিতিনের জীবনে সাইফুল আলোর দিশারী হয় কি? না, সব তিতিন ফেরে না, ফিরতে পারে না। যারা পারে, "তিতিন' তাদের গল্প বলে, আর যারা ফিরতে পারে না- তাদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকে। দশ বছরের ছোট্ট তিতিন। যখনই বিপদে পড়েছে তথাকথিত 'সুশীল সমাজ' হাত বাড়িয়েছে, তবে 'অশুভ কালো হাত' এত কঠিন পথ পাড়ি দেওয়ার জন্য 'দশ বছর' বয়সটা নিতান্তই কম। কিন্তু পরিস্থিতি মানুষকে শক্ত করে দেয়, তাও মানতে না চাইলে গল্পচ্ছলে মেনে নিয়ে "তিতিন" উপন্যাসের শিক্ষা আর মূলবার্তাটুকু সত্যিই হৃদয়স্পর্শী!

জীবন মহান আল্লাহ প্রদত্ত পরীক্ষাক্ষেত্র।

 

إِنَّ مَعَ ٱلْعُسْرِ يُسْرًا

নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে রয়েছে স্বস্তি। (আশ-শার্ ৯৪:)

শত কষ্টের মাঝেও মহান স্রষ্টা সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার এই বাণীকে সাথে করে পথ পাড়ি দেওয়াতেই প্রকৃত সার্থকতা নিহিত!

Post a Comment

Previous Post Next Post