নীল আর্মস্ট্রং এর গল্প পড়ার পর থেকেই আমার চাঁদে যাওয়ার খুব শখ। জোছনা ছোঁয়ার শখ।
সেই জোছনা ছোঁয়ার শখ আমি পূরণ করেছিলাম তোমাকে ছুঁয়ে। তোমাকে দেখার পর থেকে আমার আর আর চাঁদ দেখার শখ ছিলো না। নীল আর্মস্ট্রংকে আর হিংসাও লাগতো না।
তোমারে পাওয়ার পর আমি নীল আর্মস্ট্রং আর বাজ অলড্রিনকে হিংসা না, করুণার চোখে দেখতাম। মনে মনে বলতাম, নকল চাঁদ ছোঁয়ার আনন্দেই তোমরা এতো খুশি? আসল চাঁদ তো আমার কাছে।
আইয়ূব বাচ্চুর গান আমি তোমারে পাওয়ার আগে বুঝতাম না। শুনতামও না। তোমারে পাওয়ার পর হঠাৎই একদিন মনে হলো, চাঁদ দেখতে আমার ভালো লাগে না। চাঁদের দিকে তাকাইলে আমার তোমার কথা মনে পড়ে। মনে পড়ে আইয়ূব বাচ্চার সেই গান, তোমার মুখের হাসি দেখলে, চাঁদ যে আমার ভালো লাগে না......
আমার জোছনা প্রীতির পুরোটাই আমি পেয়েছিলাম গৌতম বুদ্ধের কাছে থেকে। রাজা সিদ্ধার্থ। গৃহত্যাগী জোছনার টানে রাণী, রাজত্ব আর রাজপুত্র ছেড়ে গৌতম বুদ্ধ হয়ে গেলেন।
তোমারে দেখার পর আমিও গৌতম বুদ্ধই হয়েছিলাম, জানো? তবে আমারে বনে যাইতে হইলো না, আমার রাজ্য ছাড়তে হইলো না, আমি ছাড়লাম পৃথিবী। তবে সবকিছু ছাইড়া আমি তোমারে পাইলাম, পৃথিবী ছাইড়া আমি চাঁদরে পাইলাম, এই পাওয়া সৌদির যুবরাজ পাইলো না, ভ্লাদিমির পুতিন পাইলো না, আমি পাইলাম। এরচে বড় জয় আর কী হইতে পারতো, বলো?
সূরা আত ত্বীনে আল্লাহ বলতেসেন, লাকাদ খালাকনাল ইনসানা ফি আহসানি তাকবীম। নিশ্চয়ই আমি মানুষরে সৃষ্টি করেছি সুন্দরতম অবয়বে।
আয়াতটা আমার মনে অনেক প্রশ্ন তুইলা দিলো। এতো ফুল, এতো পাখি, ঐ চাঁদ, সুর্য, তারা, পাহাড়, সমুদ্র সুন্দর না? মানুষই সুন্দর? কীভাবে সম্ভব?
এই প্রশ্নের উত্তর আমি পাইসিলাম তোমারে পাওয়ার পর। তোমার চোখে আমি দেখসিলাম সমুদ্র, তোমার হাসিতে পাইসিলাম ফুল, আর তোমার রাগে আমি পাইসিলাম আগ্নেয়গিরি, তোমার চুল ছুঁয়ে আমি মেঘ ছুঁইতে পারছিলাম।
চান্নিপসর রাইতে আগে গৌতম বুদ্ধের মতো বের হয়ে যাইতে ইচ্ছা করতো। আরণ্যক পড়ে বনমানুষ হওয়ার সাধ হইসিলো খুব। অথচ এখন আমার আর বুদ্ধ হইতে ইচ্ছা করে না, হিমু হইতে ইচ্ছা করে না। দূর থেকে চাঁদ দেখে আর মুগ্ধ হতে ইচ্ছা করে না।
এখন আমার শুধু ঐ জোছনা রাইতে তোমারে যাইয়া বলতে ইচ্ছা করে, তোমার মুখের হাসি দেখলে, চাঁদ যে আমার ভালো লাগে না.......
যত কষ্টই দাও, তোমার এই ঋণ আমি কেমনে শোধ করি, বলো তো?
إرسال تعليق