বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা নামতে বেশি দেরি নেই। বেলা ফুরিয়ে আসতে না আসতেই সাথে করে নিয়ে এলো সাইকোলজিক্যাল টেমপ্লেট কল্পনা। রঞ্জুর মাইগ্রেন এর ব্যাথাটা এখন নেই। নুরু ভাই কল করে বললেন উনার ক্যান্টিনে আসার জন্য। উনি প্রায় ক্যান্টিন ফেলে আজ-কাল কোথায় যেনো চলে যান। অন্যমনস্ক ভাবনায় সাঁতার কাটতে কাটতে বাংলা হোটেলের ডানে বিরিয়ানির দোকান টা পার করে বাতেন সড়কের মাথায় এসে দাড়ালো রঞ্জু। হঠাৎ করেই মনে হলো সন্ধ্যার আলো ছায়াতে কালছে মুখটায় একগাল হাসি নিয়ে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে জয়ন্ত ভাই। উনার হাসিতে কি ভীষণ রহস্য ডুবে আছে।
হঠাৎ করেই ডাক দিয়েই বললেন
-কোন দিকে যাবেন কবি সাহেব।
রঞ্জু চকিত হয়ে তাকালো। হ্যাঁ সত্যিই জয়ন্ত ভাই দাঁড়িয়ে। চারিদিক টা কেমন শান্ত। জয়ন্ত ভাইয়ের পাঞ্জাবি টা খুব অদ্ভুত ভাবে উড়ছে। অথচ চারিদিকে বাতাসের নাম-গন্ধ ও নেই। রঞ্জু হাসি মুখে জবাব দিলো
- আরে জয়ন্ত ভাই। চলেন ভাই ডানেই স্টেডিয়াম। ওই পথ ধরেই আগাই। কিছুক্ষণ হাঁটি। আপনি তো আবার হাঁটতে হাঁটতে কথা বলেন।
বাতেন সড়কের মাথায় এক কোনায় কিছু মানুষ জটলা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। একজন ছোটখাটো বক্সের ভিতর বাত ব্যাথা, খোস-পাঁচড়ার ভেষজ ঔষধ বিক্রি করছেন। তাদের পিছনে ফেলে মিনিট খানেক হাটার পর উৎসুক দৃষ্টিতে জিগ্যেস করলাম
- তা জয়ন্ত ভাই, এতোদিন পর কোথা থেকে আসলেন। সেই যে বছরখানেক আগে শেষ দেখা হলো আর তো আপনার দেখাই পেলাম না।"
ফুটপাতে বসা ভিক্ষুক ছেলেটার দিকে তাকিয়ে হাটতে হাটতেই নজর ফেরালেন জয়ন্ত ভাই। মুখভর্তি খোচাখোচা দাড়ির আড়াল থেকে একটু হাসলেন। কিন্তু প্রশ্নের উত্তর দিলেন না। জয়ন্ত ভাই মাটির মানুষ। সেই বছর খানেক আগে জয়ন্ত ভাইয়ের সাথে প্রায় রোজ আড্ডা হতো। ভার্সিটি থেকে ফিরার পথে কিংবা বিকাল বেলা বট তলার চায়ের দোকানে কত সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়েছিলো আড্ডায় আড্ডায় তার ইয়াত্তা নেই। কত পড়ন্ত বিকেলে বসে বসে সদ্য লিখা কবিতা শুনাতাম উনাকে। এরপর হঠাৎ করেই জয়ন্ত ভাই চলে গেলেন পুরান ঢাকায়। ফেসবুকে টুকটাক কথা হলেও, জয়ন্ত ভাই এই এলাকায় আর আসেন নি।
- তা তোর আলোকনন্দা কেমন আছে"।
জয়ন্ত ভাইয়ের প্রশ্নে নিরবতা ভাংলো।
শান্ত চোখে জবাব দিলাম
- এই তো ভালোই আছে।
জয়ন্ত ভাই ঠোঁটের কিনারে আবারো সেই চাপা হাসি দিয়ে বলে উঠলো
- আমার কেনো যেনো মনে হয় তুই আলোকনন্দা কে ভালোই বাসিস নি। যাই হোক এতোই যখন জোর দাবি নিয়ে আশার বুক পেতে রেখেছিস, তা সেই যুক্তিতে মেনে নিলাম ভালোবাসিস। তা কেমন ভালোবাসিস বল তো"।
এই প্রথম আমি হাসলাম। জয়ন্ত ভাই আমার দিকে তাকিয়ে কিছু বললেন না। হয়তো মনে মনে বলেছেন "আমাকে নকল করার মানে হয়না রঞ্জু। যা বলতে বললাম সেটা বল"।
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। মনে হচ্ছে জয়ন্ত ভাই পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন প্রশ্নটি করেছেন। এ প্রশ্নের উত্তর কি আদৌ আমার জানা আছে?
- জয়ন্ত ভাই, আমি আমার আলোকনন্দা কে ভালোবেসেই পরিপূর্ণ। সে যেখানেই থাকুক না কেনো, যতটা দূরেই থাকুক না কেনো আমি শুধু তাকেই ভালোবাসি।
এতোটুকু বলতেই জয়ন্ত ভাই আমাকে থামিয়ে দিলেন। স্টেডিয়ামের পাশের মেইন রোডটায় এখন গাড়ির বিশাল লাইন থাকার কথা। অথচ এতোক্ষণ পর সোঁ সোঁ করে একটা বাইক স্ব-শব্দে নিজের উপস্থিতি জানিয়ে গন্তব্যের দিকে ছুটে পালালো। জয়ন্ত ভাই আবারো তৃতীয় বারের মতো সেই রহস্যময় চাপা হাসিটা দিয়ে বলে উঠলেন
- রঞ্জু সিগারেট খাবো। সিগারেট নে।
কখন যেনো সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নেমেছে মিরপুরের আকাশে। অথচ আজকের সব কিছু অদ্ভুত। রাস্তায় কোনো গাড়ী-ঘোড়া নজরে পড়ছে না। আশেপাশে কয়েকটা টং দোকানে অসহায় চাহনিতে হাতেগোনা কয়েকটা লোকজন আর হুটহাট পাশ কাটানো পথিক ছাড়া আর কাউকেই দেখছিনা। তাদের সবার চোখে-মুখে ভাবলেশহীন একটা চাহনি। মনে হয় আশেপাশের জগৎ নিয়ে কোনো চিন্তাই তাদের আচ্ছন্ন করতে পারছেনা। তারা আছে তাদের জগৎ নিয়ে।
হুট করে কেনো যেনো মনে হচ্ছে এখন রাত নয়, গভীর রাত। কি ভিষণ অদ্ভুত ভাবে দৃশ্যপট বদলে গেছে। জয়ন্ত ভাইয়ের সাথে কখন দেখা হলো সে সময় টা মনে পড়ছে না। আমি পকেটে হাত দিতেই দেখি চকচকে একশো টাকার একটা নোট। চারপাশ সুনশান-নিস্তব্ধ। স্টেডিয়াম রোডের গেট এর পাশে একটাই মাত্র চায়ের দোকান খোলা। জয়ন্ত ভাই কে নিয়ে টং এর কাছে এসে বললাম
- কোনোটা নিবো ভাই।
উনি চতুর্থ বার এবং প্রথম বারের মতো একটু শব্দ করে হেসে বললেন
- একটা নিলেই হলো। তুমি যেটা খাও তাই নাও।
সিগারেট নিলাম। টং এর উপর ঝুলানো লাইটার টায় বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেই আগুন ধরালাম। বিষন্নতা আমাকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরেছে। চোখ বন্ধ করে মনের তৃপ্তি নিয়ে সিগারেট এ টান দিলাম। ধোঁয়া ছেড়ে পিছনে তাকাতেই দেখি আমি বাতেন সড়কের মাথায়। জয়ন্ত ভাই নেই। চারিদিকে রাত নেমে এসেছে। বিরিয়ানির দোকানটা বন্ধ করে দিচ্ছে। হন্যে হয়ে ব্যাস্ত পথিক ফিরে যাচ্ছে বাসার পথে। সারাদিনের ক্লান্তি ভর করেছে সবার চোখেমুখে।
পিঠের উপর একটা হাত পড়তেই একটা মেয়েলি কন্ঠ কানে আসলো।
- রুঞ্জু কতবার বলা লাগে আপনাকে, যে সিগারেট খাবেন না। আপনার কি লজ্জা নেই। একটা মানুষ কে একটা কথা কয়বার বলতে হয়।
কন্ঠটা আমার খুব পরিচিত মনে হলো। হ্যাঁ আসলেই পরিচিত। খুব পরিচিত কন্ঠ। চোখ ঘুরিয়ে বামে তাকাতেই দেখি আলোকনন্দা দাঁড়িয়ে আছে। আমি অবাক হতে গিয়েও অবাক হলাম না।
জয়ন্ত ভাইয়ের মতো দ্বিতীয় বার আবার চাপা হাসি দিলাম। মাথা থেকে জয়ন্ত ভাইকে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা চলছে মনে মনে। তবুও সুহাসীর দিকে তাকিয়ে বললাম
- কেমন আছো সুহাসী।
- একদম কথা ঘুরাবার চেষ্টা করবেন না বলে দিলাম। আর মানুষ কে নকল করা বাদ দিন না। আপনাকে চাপা হাসিতে মানায় না। আপনার কি মনে হয় ? আপনি জয়ন্ত ভাইয়ের মতো চাপা হাসি দিলেই আপনাকে আমার রহস্যময় মনে হবে?। চুপচাপ বলুন সিগারেট কেনো ধরালেন ?।
আমি ওর কথার উত্তর দিলাম না। সুহাসীর মুখে জয়ন্ত ভাইয়ের কথা শুনে ভীষণ অবাক হচ্ছিলাম। চারিপাশে কোথাও জয়ন্ত ভাইয়ের চিহ্ন টুকুও নজরে পড়ছে না। সুহাসী কি জয়ন্ত ভাইকে দেখেছে?
আমি নিজেকে শান্ত করে আবার মুচকি হাসি দিলাম। কেনো যেনো মনে হচ্ছে জয়ন্ত ভাই আমার ভিতরে একটা রোগ ধরিয়ে দিয়ে গেছেন। উনার মতো রহস্যময় চাপা হাসির রোগ।
আশেপাশে আবার সব পরিবর্তন হয়ে গেছে। পরিবেশ টা গভীর রাতের মতোই। অথচ একটা বাচ্ছা ছেলে হাত ধরে টান দিয়ে বললো
- ভাই সিগারেট এর টাকাটা দেন।
গলায় একটা গামছায় বিশাল ট্রে নিয়ে তার উপর সুন্দর করে রং-বেরঙের সিগারেট এর প্যাকেট সাজিয়ে রেখেছে। আমি অবাক হওয়ার চুড়ান্ত সীমানা পেরিয়ে গেছি। হাতের দিকে তাকিয়ে একশ টাকার চকচকে নোট টা দিতে গেলাম। কিন্তু টাকাটা নেই। পকেটে হাত দিয়েও দেখলাম আমার কাছে কোনো টাকাই নেই। আমি বিস্মিত চোখে আলোকনন্দার দিকে তাকালাম। কিন্তু কিছু বলার আগেই গোলাপি ব্যাগ টা থেকে পনেরো টাকা বের করে ছেলেটাকে দিয়ে দিলো সে। আমার দিকে তাকাতেই আমি আবার সেই চাপা হাসিটা দিলাম। ও সরু চোখে রাগী রাগী হয়ে তাকিয়ে আছে
- কোন দিকে যাবেন।
এবার আর স্টেডিয়ামের রাস্তায় গেলাম না। বললাম - চলো সুহাসী, বামে চলো। গোলচত্বরের দিকেই হাটি।
বাতেন সড়ক থেকে আবার হাঁটা ধরলাম। আলোকনন্দা মেরুন রঙের শাড়ি পরেছে। স্লীম ব্লাউজের বুকের কাছেই ছোট্ট একটা লকেট। কানের ঝুমকো গুলো একটু বড়ো। চির তরুণীরদের সব চেয়ে আকর্ষণীয় অঙ্গ হলো ঠোঁট। আলোকনন্দার ঠোঁটে হাল্কা লিপস্টিক দেয়া। এই অন্ধকারেও আমি তা টের পাচ্ছি। খোলা চুলে আমার দিকে তাকাতেই কেনো যেনো মনে হলো কিছু একটা কমতি আছে। ভালো করে তাকাতেই দেখি ও কাজল দেয়নি। একটু মন খারাপ হলো। আমি কিছুই বললাম না। ফায়ার সার্ভিস এর গেট টা পার হতেই ও জিগ্যেস করলো
- রঞ্জু, জয়ন্ত ভাই কেনো বললেন আপনি আমাকে ভালোবাসতে পারেননি ?
এবার আর হাসলাম না। আমি ওর দিকে তাকালাম। কি ভীষণ মায়া সে মুখের আদ্যোপান্তের কিনারায়।
- তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে। কিন্তু এতো পাতলা শাড়ি পরেছো কেনো? শাড়ির আড়ালে তোমার পেট দেখা যাচ্ছে ?
আলোকন্দা সরু চোখে তাকালো আমার চোখে।
সে চোখে কেনো এতো মায়া মেশানো। মনে হচ্ছে কোনো এক নেশা আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলছে।
- শুনুন এখন গভীর রাত। আশেপাশে কেউ নেই যে আমাকে দেখতে আসবে। আর আমি পাতলা শাড়ি পরিনি। মোটেও আমার পেট দেখা যাচ্ছে না। ওসব আপনার নষ্ট মাথার চিন্তা। কথা না ঘুরিয়ে আমার প্রশ্নের জবাব দিন।
এবার আমি চোখ নামালাম। জয়ন্ত ভাইকে এখন আমার আবছা আবছা মনে পড়ছে। আমি নিচু স্বরে জবাব দিলাম
- আমি কি করে জানবো সুহাসী। উনি কেনো এমন বলেছেন, ওটা তো জয়ন্ত ভাই জানেন"।
আলোকনন্দা কি যেনো ভাবলো জানি না। আমার দিকে তাকিয়ে বললো
- আমাকে কতটা ভালোবাসেন এখনো কিন্তু বলেননি। জয়ন্ত ভাই থামিয়ে দিয়েছিলো। এখন বলুননা আমি শুনবো।
আমি ওর চোখের দিকে তাকাতেই আবার অবাক হলাম। ওর চোখে কাজল দেয়া। আমার খুব ভালো লাগলো। মনে হচ্ছিলো সময় টা থামিয়ে দেই। এই খোলা আকাশের নিছে আমি আর আলোকনন্দা। আমি ওর কাজল চোখের দিকে তাকিয়ে আছি। আকাশের কোনো একচিলতে হাসি নিয়ে চাঁদ তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। রাস্তার সোডিয়াম ল্যাম্পপোস্ট এর রঙ জ্বলা হলুদ আলোটাতে ওকে খুব মায়াবী লাগছে। আহা কি বিস্মিত এই গভীর রাতের সৌন্দর্য। সময় টা যদি সত্যি থামানো যেতো৷ হুট করে একটু বাতাস আসলো। আমার ঝাকড়া চুল গুলো নড়ে উঠতেই আমি স্পষ্ট খেয়াল করলাম আলোকনন্দার মুখের সামনে লম্বা চুলের জুলপি গুলো নড়লো না। ওর শাড়ির আঁচল টাও জায়গায় থেকে নড়লো না।
ভ্রু- কুঁচকে ওসব মাথা থেকে ঝেড়ে আমি আবার একটা চাপা হাসি দিলাম। দাড়িতে হাত বুলিয়ে ওর দিকে তাকালাম। আলোকনন্দা চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ও চাঁদের দিকে তাকালাম। গম্ভীর স্বরে ওকে ডাকলাম
- আলোকনন্দা, আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি আমি জানি না। শুধু জানি আমার সমস্ত গুণে খাওয়া কাঠের মতো হৃদয় জুড়ে যতটা ভালোবাসা বাকি রবে ততটা ভালোবাসা শুধু তোমার জন্য। তোমাকে এক জনম ভালোবেসেও আমার কাছে কমতি রয়ে যাবে। তোমাকে কেনো যেনো এ মেট্রোপলিটন শহরের বুকে মিশে থাকা এক পৃথিবী বাতাসের সমান কিংবা কাঠগোলাপের শুভ্রতায় হাজারো রোদের আলো মিশিয়ে তিলে তিলে জমানো নিখাদ ভালোবাসা দিতে মন চায় আমার। আমার শহরের প্রতিটি নিয়ন বাতিতে তোমার নাম লিখে দিতে মন চায় সুহাসীনি।
সত্যি বলতে আমি তোমাকে অগণিত সংখ্যার বেহিসেবী তারার পরিমান ভালোবাসি। মহাশুন্যের কক্ষপথে নিজ গতিপথে চলমান দুই নাম না যানা নক্ষত্রের দূরত্বের সমান ভালোবাসি। অথচ জানো আলোকনন্দা, তবুও রোজ রোজ একটা মধ্যবয়সী তারার সাথে তোমার আমার দূরত্বের পরিধি মাপতে গিয়ে দেখি, এখনো একটা মিল্কিওয়েতে কবিতার মিছিলে পাড়ি জমাতে হবে তোমার অপেক্ষায়।"
আমি থামলাম। দ্বিতীয় বারের মতো আরেকটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আবার সিগারেট এ শেষ টানটা দিলাম। খেয়াল করলাম আমার চোখে জলধারা নেমেছে। কিন্তু এই জল কান্নার জল কিনা বুঝলাম না। চাঁদের দিকে তাকাতে তাকাতে হয়তো অমন হলো। সিগারেট এর ধোয়া ছেড়ে সামনে তাকাতেই দেখি আলোকনন্দা নেই। মাথার উপর নীল আকাশ। পশ্চিম আকাশে লাল রঙ মিশিয়ে সুর্যটা বিদায় নিচ্ছে। আশেপাশে গাড়ির হর্ন আর মানুষের ব্যাস্ততায় পরিবেশ তুখোড় জমজমাট হয়ে আছে।
আমি বাতেন সড়কের মাথায় দাঁড়িয়ে আছি। পিছনে তাকাতেই দেখি বিরিয়ানির দোকান টায় লাল রঙের কাপড় বাঁধা বড় পাতিল গুলো দেখা যাচ্ছে। সামনের দিকেই তাকাতেই একটা বাচ্ছা ছেলের কন্ঠ কানে আসলো।
- ভাই আমার কাছে একশ টাকার ভাংতি নাই। খুচরা দেন।
চকচকে একশ টাকার একটা নোট আমার হাতে। টাকাটা মানিব্যাগ এ রাখতে গিয়ে আলোকনন্দার ছবিটার দিকে নজড় পড়লো। টাকা রেখে ছবিটার ঠিক পেছনের ছোট্ট ভাজ থেকে পনেরো টাকা বের করলাম। বাচ্চাটার হাতে দিতে দিতেই খেয়াল করলাম গলায় একটা গামছায় বিশাল ট্রে নিয়ে তার উপর সুন্দর করে রং-বেরঙের সিগারেট এর প্যাকেট সাজিয়ে রেখেছে। আমি আর দাড়ালাম না। জলন্ত সিগারেটে টান দিয়েই হাটা ধরলাম। এবার আর ডানে বামে গেলাম না। মেইন রোড টা পার হয়ে ফলপট্টির দিকেই আগালাম। নুরু ভাইয়ের কথা মনে পড়লো আমার। সন্ধ্যার বাতাসে নিকোটিনের ঘ্রাণ ছড়াতে ছড়াতে ভাবলাম, আলোকনন্দা কি আমার কথা গুলো শুনেছে? ও কি জানে আমি ওকে কতটা ভালোবাসি?
-চলবে...
إرسال تعليق